টিভি দেখা ও বইমেলার আগুন প্রসঙ্গে
সম্প্রতি হঠাৎ করেই বাসায় আমার টিভি দেখা বেড়ে গেছে, বাসায় যতক্ষণ থাকি বেশির ভাগ সময়ই টিভির সামনে বসে থাকি। এই নিয়ে বাসার অন্যান্য সদস্যরা মহাবিরক্ত। কেননা টিভি দেখার পেছনের যতটা না কারণ টিভি প্রোগ্রাম, তার চেয়ে বেশি শাহবাগ প্রজন্মচত্ত্বরের আন্দোলন কিংবা দেশের বর্তমান অবস্থা। বেশিরভাগ সময়ই খবর আর টিভি টকশো দেখা আমার একটা নেশায় পরিনত হয়ে গেছে। মজার ব্যাপার হলো যতবারই টিভির সামনে বসি, ততবারই আমার মনে প্রশ্ন জাগে, টিভি চ্যানেলগুলোর টিআরপি কি আগের চেয়ে বেড়ে গেছে, এই রাজকার বিরোধী আন্দোলনের কারণে! আমাদের চ্যানেলগুলিতে খবর ছাড়া দেখার মত আসলে কী আছে? আমাদের মা-বোনেরা কেন বাংলাদেশি চ্যানেল বাদ দিয়ে কেবল ভারতীয় চ্যানেলগুলির দিকে ঝুঁকে থাকছে? তাহলে কী এই দাঁড়াচ্ছে টিভি চ্যানেলগুলোর একমাত্র বিনোদন হচ্ছে খবর আর টকশো!
এখানকার অনেক প্রোগ্রামেই দেখি ভারতীয় চ্যানেলগুলির ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ টাইপ প্রোগ্রাম কিংবা ওখানকার
কুরুচির সিরিয়ালগুলির কপি করার চেষ্টা। এখানকার একটি চ্যানেলের সঙ্গে অপর চ্যানেলের প্রোগ্রামের মানগত কোনো পার্থক্যচোখে পড়ে না আমার। এদেশে এখন এতগুলো চ্যানেল তবু মনে হয় আমি একটি চ্যানেলই দেখছি। কিন্তু কেন এমন বৈচিত্রহীণতা? বিষয়টা আমাকে ভাবায়, মানসিকভাবে আহত করে! বুঝতে পারি, আমাদের টিভি চ্যানেল বেড়েছে, কিন্তু চ্যানেলগুলো আজও নিজ মেরুদণ্ড নিয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
তবু আমি টিভি দেখি, টিভিতে খবরই দেখি। আমার চোখে পড়ে শাহবাগের রাজাকার বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে প্রায় সব চ্যানেলই অবস্থান নিয়েছে। এই অবস্থান নেয়ার ক্ষেত্রে ধরে নিচ্ছি আন্দোলনে পক্ষপাত এবং টিআরপি দুই-ই কাজ করছে।
তবু ব্যতিক্রম দু’একটি চ্যানেল! এই ব্যতিক্রম চ্যানেলগুলোর বক্তব্য শুনে, আর টিভি ফুটেজ দেখে আমার মনে পড়ে ‘ফক্স টিভি’র কথা। যেখানে একদিন দেখেছিলাম বিপ্লবী চে গুয়েভারাকে দেখানো হয়েছিল সন্ত্রাসবাদী হিসেবে! চে-কে ফক্স টিভির সন্ত্রাসবাদী হিসেবে দেখানোটাকে যেমন আমি সেদিন সা¤্রাজ্যবাদী মিডিয়ার কু-চুক্র হিসেবে দেখেছিলাম, এইরকমভাবে শাহবাগ রাজাকার বিরোধী আন্দোলনকে যে দু’একটা মিডিয়া নাস্তিকদের আন্দোলন হিসেবে দেখাতে চায় তাদেরকেও মনে মনে কু-চক্রি মিডিয়া বলে গাল দিচ্ছিলাম। আমি চাই ওইসব কু-চক্রি মিডিয়াগুলোকে যেন বন্ধ করে দেয়া হয়!
২.
এরমধ্যে রোববার রাত ১টার দিকে টিভির সামনে বসা অবস্থায় হঠাৎ আঁতকে উঠি। দেখি, টিভি স্ক্রলে ঝুলছে ‘বাংলা একাডেমী বই মেলাতে আগুন’। প্রশ্ন জাগে এই গভীর রাতে এখানে আগুন লাগলো কিভাবে? একটার পর একটা চ্যানেল ওল্টাতে থাকি ঘটনার ডিটেইলস জানার জন্য। বুঝতে পারি এত রাতে তখনও টিভি রিপোর্টাররা পৌঁছাননি বাংলাএকাডেমীতে। মনে পড়ে দিন-দুয়েক আগেই কথা হয়েছিল কয়েক জন প্রকাশকের সাথে, তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই ছিল হতাশা। এবারের বইমেলাটা একদমই জমেনি, বিক্রিবাট্টাও খুব একটা ভালো হয়নি। ভরসা এখন শেষের কয়েকদিন। অনেকে চাইছিলেন মেলাটাকে যেন আরও সপ্তাহখানেক বাড়ানো হয়। কিন্তু এ-কি দুঃসংবাদ, বইমেলাতে আগুন! যে বইমেলা লেখক-পাঠক আর প্রকাশকের মিলনমেলা সেখানে আজ নতুন বইয়ের গন্ধের জায়গায় পোড়া বইয়ের গন্ধ! ক্ষতি হয়েছে দু’কোটি টাকা!
গভীররাতে কিভাবে ঘটল এমন ঘটনা? মনে পড়ে শাহবাগ প্রজন্মচত্ত্বরের আন্দোলনকে যেদিন ২৪ ঘণ্টা বাদ দিয়ে ৩টা থেকে করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, সেদিনই হত্য করা হয় রাজীবকে। অপর দিকে যেদিন শাহবাগ থেকে সরে গিয়ে আন্দোলন কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়, তার পরদিনই ধর্মের লেবাসধারী একদল রাষ্ট্রবিরোধী শহীদ মিনারে ভাঙচুর করে, পতাকা পোড়ায়, সাংবাদিকদের উপর হামলা করে। বইমেলায় আগুন দেয়া ওইজাতীয কু-চক্রিদের কাজ না- তো আবার? আশা করছি সরকার খুব শিগগিরই তদন্ত করে বইমেলাতে আগুন লাগার কারণ উদঘাটন করবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। উদঘাটন করবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে।
সম্প্রতি হঠাৎ করেই বাসায় আমার টিভি দেখা বেড়ে গেছে, বাসায় যতক্ষণ থাকি বেশির ভাগ সময়ই টিভির সামনে বসে থাকি। এই নিয়ে বাসার অন্যান্য সদস্যরা মহাবিরক্ত। কেননা টিভি দেখার পেছনের যতটা না কারণ টিভি প্রোগ্রাম, তার চেয়ে বেশি শাহবাগ প্রজন্মচত্ত্বরের আন্দোলন কিংবা দেশের বর্তমান অবস্থা। বেশিরভাগ সময়ই খবর আর টিভি টকশো দেখা আমার একটা নেশায় পরিনত হয়ে গেছে। মজার ব্যাপার হলো যতবারই টিভির সামনে বসি, ততবারই আমার মনে প্রশ্ন জাগে, টিভি চ্যানেলগুলোর টিআরপি কি আগের চেয়ে বেড়ে গেছে, এই রাজকার বিরোধী আন্দোলনের কারণে! আমাদের চ্যানেলগুলিতে খবর ছাড়া দেখার মত আসলে কী আছে? আমাদের মা-বোনেরা কেন বাংলাদেশি চ্যানেল বাদ দিয়ে কেবল ভারতীয় চ্যানেলগুলির দিকে ঝুঁকে থাকছে? তাহলে কী এই দাঁড়াচ্ছে টিভি চ্যানেলগুলোর একমাত্র বিনোদন হচ্ছে খবর আর টকশো!
এখানকার অনেক প্রোগ্রামেই দেখি ভারতীয় চ্যানেলগুলির ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ টাইপ প্রোগ্রাম কিংবা ওখানকার
কুরুচির সিরিয়ালগুলির কপি করার চেষ্টা। এখানকার একটি চ্যানেলের সঙ্গে অপর চ্যানেলের প্রোগ্রামের মানগত কোনো পার্থক্যচোখে পড়ে না আমার। এদেশে এখন এতগুলো চ্যানেল তবু মনে হয় আমি একটি চ্যানেলই দেখছি। কিন্তু কেন এমন বৈচিত্রহীণতা? বিষয়টা আমাকে ভাবায়, মানসিকভাবে আহত করে! বুঝতে পারি, আমাদের টিভি চ্যানেল বেড়েছে, কিন্তু চ্যানেলগুলো আজও নিজ মেরুদণ্ড নিয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
তবু আমি টিভি দেখি, টিভিতে খবরই দেখি। আমার চোখে পড়ে শাহবাগের রাজাকার বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে প্রায় সব চ্যানেলই অবস্থান নিয়েছে। এই অবস্থান নেয়ার ক্ষেত্রে ধরে নিচ্ছি আন্দোলনে পক্ষপাত এবং টিআরপি দুই-ই কাজ করছে।
তবু ব্যতিক্রম দু’একটি চ্যানেল! এই ব্যতিক্রম চ্যানেলগুলোর বক্তব্য শুনে, আর টিভি ফুটেজ দেখে আমার মনে পড়ে ‘ফক্স টিভি’র কথা। যেখানে একদিন দেখেছিলাম বিপ্লবী চে গুয়েভারাকে দেখানো হয়েছিল সন্ত্রাসবাদী হিসেবে! চে-কে ফক্স টিভির সন্ত্রাসবাদী হিসেবে দেখানোটাকে যেমন আমি সেদিন সা¤্রাজ্যবাদী মিডিয়ার কু-চুক্র হিসেবে দেখেছিলাম, এইরকমভাবে শাহবাগ রাজাকার বিরোধী আন্দোলনকে যে দু’একটা মিডিয়া নাস্তিকদের আন্দোলন হিসেবে দেখাতে চায় তাদেরকেও মনে মনে কু-চক্রি মিডিয়া বলে গাল দিচ্ছিলাম। আমি চাই ওইসব কু-চক্রি মিডিয়াগুলোকে যেন বন্ধ করে দেয়া হয়!
২.
এরমধ্যে রোববার রাত ১টার দিকে টিভির সামনে বসা অবস্থায় হঠাৎ আঁতকে উঠি। দেখি, টিভি স্ক্রলে ঝুলছে ‘বাংলা একাডেমী বই মেলাতে আগুন’। প্রশ্ন জাগে এই গভীর রাতে এখানে আগুন লাগলো কিভাবে? একটার পর একটা চ্যানেল ওল্টাতে থাকি ঘটনার ডিটেইলস জানার জন্য। বুঝতে পারি এত রাতে তখনও টিভি রিপোর্টাররা পৌঁছাননি বাংলাএকাডেমীতে। মনে পড়ে দিন-দুয়েক আগেই কথা হয়েছিল কয়েক জন প্রকাশকের সাথে, তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই ছিল হতাশা। এবারের বইমেলাটা একদমই জমেনি, বিক্রিবাট্টাও খুব একটা ভালো হয়নি। ভরসা এখন শেষের কয়েকদিন। অনেকে চাইছিলেন মেলাটাকে যেন আরও সপ্তাহখানেক বাড়ানো হয়। কিন্তু এ-কি দুঃসংবাদ, বইমেলাতে আগুন! যে বইমেলা লেখক-পাঠক আর প্রকাশকের মিলনমেলা সেখানে আজ নতুন বইয়ের গন্ধের জায়গায় পোড়া বইয়ের গন্ধ! ক্ষতি হয়েছে দু’কোটি টাকা!
গভীররাতে কিভাবে ঘটল এমন ঘটনা? মনে পড়ে শাহবাগ প্রজন্মচত্ত্বরের আন্দোলনকে যেদিন ২৪ ঘণ্টা বাদ দিয়ে ৩টা থেকে করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, সেদিনই হত্য করা হয় রাজীবকে। অপর দিকে যেদিন শাহবাগ থেকে সরে গিয়ে আন্দোলন কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়, তার পরদিনই ধর্মের লেবাসধারী একদল রাষ্ট্রবিরোধী শহীদ মিনারে ভাঙচুর করে, পতাকা পোড়ায়, সাংবাদিকদের উপর হামলা করে। বইমেলায় আগুন দেয়া ওইজাতীয কু-চক্রিদের কাজ না- তো আবার? আশা করছি সরকার খুব শিগগিরই তদন্ত করে বইমেলাতে আগুন লাগার কারণ উদঘাটন করবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। উদঘাটন করবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে।