শাহবাগ / প্রতুল মুখোপাধ্যায়
ধর্মের নামে নিপীড়ন আর ধর্মের নামে খুন
রুখতে দাঁড়ালো বাংলাদেশের তরুণী আর তরুণ।
শোক হয়ে ওঠে ঘৃণার আগুন পবিত্র শাহবাগে,
তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলাতে এখনও ইচ্ছে জাগে।
পেয়েছি খবর, তাদের সঙ্গে রয়েছে আমারও গান;
ধন্য হয়েছি এ সাঁঝবেলায় পেয়ে এই সম্মান।
যুদ্ধকে মুছে ফেলার যুদ্ধে নিখিল বিশ্ব জুড়ে
তাদের সঙ্গে আমিও সামিল আমার গানের সুরে :
যুদ্ধকে মুছে ফেলতে চাই,
আমরা যুদ্ধে নেমেছি তাই।
মন্ত্র করেছি ভালোবাসাই
২৬/০২/২০১৩
শাহবাগ নিয়ে কবীর সুমনের গান
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে চলমান বাংলাদেশের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম ভারতের সংগীতশিল্পী কবীর সুমনও। নিজের লেখা গানের মাধ্যমে এর মধ্যেই গিটারে গণদাবি তুলেছেন তিনি। এবার ‘আনন্দ’-এর মুখোমুখি হয়ে বললেন ‘গণদাবি’ ও ‘শাহবাগে রাতভোর’ গান দুটি লেখার আদ্যোপান্ত
প্রথমত, আমি একজন সংগীতকার, যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, সংগীতে প্রাণ থাকা চাই, যাতে সমাজের ওপর তার এবং তার ওপর সমাজের প্রভাব পড়ে; যাতে সমাজের বয়সের সঙ্গে তার বয়স বাড়ে। আমার কাছে রবীন্দ্রনাথের এই উক্তিটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা যদি গোটা উপমহাদেশের দিকে তাকাই, দেখতে পাব, প্রধানত রাজনীতিক—তাঁদের দলসর্বস্বতা এবং বিচক্ষণতার অভাবের দৃষ্টান্ত। তরুণেরা আজ যেন পণ্য। এখন চারপাশে বড় বড় সংস্থা তৈরি হচ্ছে, যারা তরুণসমাজকে একটি মেকি তারুণ্যের আবরণে সস্তা ছায়াছবি, ক্রিকেটের মতো বিশেষ বিশেষ কিছু খেলা (যার মধ্যে বিজ্ঞাপনের জেল্লাই বেশি), পোশাক-আশাকের ডিজাইন—এসব দিয়ে ঢেকে রাখতে চাইছে। শুধু তা-ই নয়, তারা এগুলোকেই ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করছে।
রাজনীতির ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি, তরুণ-নবীনদের প্রতি অবহেলা আর মুনাফালোভীদের ভিড়। এই মুহূর্তে কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতার একটি চরণ খুব মনে পড়ছে, যেখানে তিনি লিখেছিলেন এই মুনাফালোভীদের প্রসঙ্গে—‘বৃদ্ধ বোধের অবাধ মুনাফামুক্তি’। কেউ একবারের জন্যও ভেবে দেখছেন না তরুণেরা কী চান। রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন, তাঁদের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে শুনে নবীনেরা বুড়ো হবেন। সারা উপমহাদেশে বৃদ্ধতন্ত্র নবীনদের স্বপ্ন ধ্বংস করছে।
বাংলাদেশের তরুণেরা চিরকালই উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোর তুলনায় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে অনেক বেশি সংবেদনশীল। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় তরুণদের ভূমিকা ছিল খুব জোরালো। আজ বাংলাদেশের তরুণেরা যৌবনের যে স্ফুরণ দেখাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনা এ দেশে আগেও ঘটেছে। কোনো রাজনৈতিক নেতাকে বেশি কাছে আসার এবং বেশি গুরুত্ব পাওয়ার সুযোগ না দিয়ে যে আন্দোলনমুখিতা দেখাচ্ছেন বাংলাদেশের তরুণসমাজ, তা উপমহাদেশের ইতিহাসে বিরল। এ ধরনের আন্দোলন গত শতাব্দীর ষাটের দশকে দেখা গিয়েছিল ইউরোপ ও আমেরিকায়।
তবে আজ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের তরুণ-নবীনেরা আমার মতো বুড়োদের দেখিয়ে দিচ্ছেন, কীভাবে বিশৃঙ্খলা না করে কেবল অন্তরের সংহতি এবং একমুখী অঙ্গীকারের ভিত্তিতে উদার এক আন্দোলন গড়ে তোলা যায়। তাঁদের এই আন্দোলন দেখে আমার মনে হচ্ছে, উপমহাদেশে এই সবে গণতন্ত্র আসছে।
ঢাকার শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বর’-এর আন্দোলন শুরু হওয়ার পরপরই আমার মনে হলো, আমার গানকে বাংলাদেশের তরুণদের কাজে লাগতে হবে। আমি তো গানের মানুষ, তাই সংগীতের মাধ্যমেই আমার দ্রোহ ও প্রতিবাদ। এই মুহূর্তে সংগীতকার হিসেবে আমার একটাই কর্তব্য: বাংলাদেশের নবীনদের এই আন্দোলনে শামিল থাকা। আমার আশা, গোটা উপমহাদেশ এবং সারা পৃথিবী বাংলাদেশের তরুণদের এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেবে।
সুত্র : প্রথম আলো
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
HTTP://WWW.KABIRSUMANONLINE.COM/HOME/CAT/AUDIOS/
সুরের জন্য
সুরের জন্য শহীদ
আলতাফ মাহমুদ,
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে রয়েছি বুঁদ।
মৃতদেহ কেউ পায়নি,
দাফনও তো করা যায়নি,
বাংলাদেশেরই মাটিতে কোথাও হয়েছে তোমার স্থান -
এ দেশের জল হাওয়ায় মিশেছে তোমার সুরের গান।
কারা মেরেছিল তাঁকে?
শাহবাগ মনে রাখে...
মনে রাখাটাই হয় ইতিহাস একুশে ফেব্রুয়ারি,
বাংলা গানের কসম বলছি আমিই কি ভুলতে পারি?
১৯/০২/২০১৩
তিন মিনিটের জন্য
তিন মিনিটের জন্য শাহবাগ হল দেশ,
তিন মিনিটের জন্য দেশটাই শাহবাগ
এ হলো নতুন যুগের জন্ম
আকাশে পূর্বরাগ।
তিন মিনিটের নীরবতা হলো
যুগের আঁতুড় ঘর
গণতন্ত্রের অভিষেক হবে
দুনিয়ায় এর পর।
শহীদ যোদ্ধা বীরাঙ্গনারা
ইতিহাস জুড়ে জাগে
যৌবন যায় ইতিহাস গড়ে
আজকের শাহবাগে।
দূর থেকে
তবুওআমি শামিল
শামিল অন্যরাও,
বুড়ো সুমনের একটাই কথা
আমায় সঙ্গে নাও।
১৩/০২/২০১৩
শহীদ রাজীব
[ নিহত ব্লগার রাজীব হায়দারকে নিয়ে ‘শহীদ রাজীব’ শিরোনামে গান প্রসঙ্গে সুমন তাঁর ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রুদের হাতে নিহত শহীদ রাজীব হায়দারকে নিয়ে এই গান। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে শহীদ হয়েছেন সাহসী এই ব্লগার। শাহবাগের গণ-আন্দোলনের একজন সাহসী যোদ্ধা তিনি। আমি তাঁর মৃত্যুর খবর শুনেছি, রাস্তায় পড়ে থাকা তাঁর রক্তাক্ত নিথর মরদেহের ছবি দেখেছি।’
সুমন আরও লিখেছেন, ‘এ গানের মধ্য দিয়ে আমার ভেতর জন্ম নেওয়া প্রচণ্ড দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে। আমি রাজীবের বাবার বয়সী। আমার সন্তানরা যে স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে, সেই স্বপ্নের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ ও মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন চিরদিন বেঁচে থাক। আরও বেঁচে থাক সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তরুণ প্রজন্মের এ সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ ]
কী বলব আজ কাকে
কোন সান্ত্বনা দেব—
এত দূরে থাকি কী করে বলব
খুনির খবর নেব!
কী বলব বন্ধুদের
কিসের অভয় দেব
এত দূরে থাকি কী করে বলব
আমি প্রতিশোধ নেব\
তবুও আমার গানে
খুনির বিরুদ্ধতা
শহীদ রাজীব পেলেন
মুক্তিযোদ্ধার অমরতা\
শহীদ রাজীব হায়দার
আমার সালাম নাও
এই দুনিয়ায় শাহাদাত বৃথা
যায় না তো একটাও।
তোমার রক্তে রাঙা
বিপুল অঙ্গীকার
যোগ্য বিচার পাবে একদিন
খুনি আর রাজাকার...
শাহবাগে রাতভোর
শাহবাগে রাতভোর
স্মৃতিতে একাত্তর
নব ইতিহাসে সাক্ষী
রইল প্রজন্ম চত্বর।
শ্লোগানে শ্লোগানে কাঁপে
লাখো নবীনের বুক
ছেলে মেয়েদের মুখেই
আমার বাংলাদেশের মুখ।
হাত ধরে ছেলে মেয়ে
মুক্তির গান গেয়ে
জেগে আছি প্রহরীর মতো
আসল বিচার চেয়ে।
শহীদ জননী দেখেছেন
জাগরণ প্রস্তুতি
সুফিয়া কামাল কাছেই আছেন
বিদ্রোহী নাতিপুতি..."
১১/০২/২০১৩
গণদাবি
বিমানে উড়তে তিরিশ মিনিট
এতো কাছে তবু দূর
বিলকুল নেই পাসপোর্ট ভিসা
সীমানা চেনেনা সুর।
সীমানা চিনিনা আছি শাহবাগে
আমার গীটারও আছে,
বসন্ত আজ বন্ধুরা দেখো
গণদাবী হয়ে বাঁচে।
বাঁচো গণদাবী, বাঁচো গণদাবী
আসল বিচার চাই,
যার যা পাওনা তাকে সেটা দাও
গণদাবী একটাই।
০৯/০২/২০১৩
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে চলমান বাংলাদেশের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম ভারতের সংগীতশিল্পী কবীর সুমনও। নিজের লেখা গানের মাধ্যমে এর মধ্যেই গিটারে গণদাবি তুলেছেন তিনি। এবার ‘আনন্দ’-এর মুখোমুখি হয়ে বললেন ‘গণদাবি’ ও ‘শাহবাগে রাতভোর’ গান দুটি লেখার আদ্যোপান্ত
প্রথমত, আমি একজন সংগীতকার, যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, সংগীতে প্রাণ থাকা চাই, যাতে সমাজের ওপর তার এবং তার ওপর সমাজের প্রভাব পড়ে; যাতে সমাজের বয়সের সঙ্গে তার বয়স বাড়ে। আমার কাছে রবীন্দ্রনাথের এই উক্তিটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা যদি গোটা উপমহাদেশের দিকে তাকাই, দেখতে পাব, প্রধানত রাজনীতিক—তাঁদের দলসর্বস্বতা এবং বিচক্ষণতার অভাবের দৃষ্টান্ত। তরুণেরা আজ যেন পণ্য। এখন চারপাশে বড় বড় সংস্থা তৈরি হচ্ছে, যারা তরুণসমাজকে একটি মেকি তারুণ্যের আবরণে সস্তা ছায়াছবি, ক্রিকেটের মতো বিশেষ বিশেষ কিছু খেলা (যার মধ্যে বিজ্ঞাপনের জেল্লাই বেশি), পোশাক-আশাকের ডিজাইন—এসব দিয়ে ঢেকে রাখতে চাইছে। শুধু তা-ই নয়, তারা এগুলোকেই ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করছে।
রাজনীতির ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি, তরুণ-নবীনদের প্রতি অবহেলা আর মুনাফালোভীদের ভিড়। এই মুহূর্তে কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতার একটি চরণ খুব মনে পড়ছে, যেখানে তিনি লিখেছিলেন এই মুনাফালোভীদের প্রসঙ্গে—‘বৃদ্ধ বোধের অবাধ মুনাফামুক্তি’। কেউ একবারের জন্যও ভেবে দেখছেন না তরুণেরা কী চান। রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন, তাঁদের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে শুনে নবীনেরা বুড়ো হবেন। সারা উপমহাদেশে বৃদ্ধতন্ত্র নবীনদের স্বপ্ন ধ্বংস করছে।
বাংলাদেশের তরুণেরা চিরকালই উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোর তুলনায় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে অনেক বেশি সংবেদনশীল। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় তরুণদের ভূমিকা ছিল খুব জোরালো। আজ বাংলাদেশের তরুণেরা যৌবনের যে স্ফুরণ দেখাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনা এ দেশে আগেও ঘটেছে। কোনো রাজনৈতিক নেতাকে বেশি কাছে আসার এবং বেশি গুরুত্ব পাওয়ার সুযোগ না দিয়ে যে আন্দোলনমুখিতা দেখাচ্ছেন বাংলাদেশের তরুণসমাজ, তা উপমহাদেশের ইতিহাসে বিরল। এ ধরনের আন্দোলন গত শতাব্দীর ষাটের দশকে দেখা গিয়েছিল ইউরোপ ও আমেরিকায়।
তবে আজ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের তরুণ-নবীনেরা আমার মতো বুড়োদের দেখিয়ে দিচ্ছেন, কীভাবে বিশৃঙ্খলা না করে কেবল অন্তরের সংহতি এবং একমুখী অঙ্গীকারের ভিত্তিতে উদার এক আন্দোলন গড়ে তোলা যায়। তাঁদের এই আন্দোলন দেখে আমার মনে হচ্ছে, উপমহাদেশে এই সবে গণতন্ত্র আসছে।
ঢাকার শাহবাগের ‘প্রজন্ম চত্বর’-এর আন্দোলন শুরু হওয়ার পরপরই আমার মনে হলো, আমার গানকে বাংলাদেশের তরুণদের কাজে লাগতে হবে। আমি তো গানের মানুষ, তাই সংগীতের মাধ্যমেই আমার দ্রোহ ও প্রতিবাদ। এই মুহূর্তে সংগীতকার হিসেবে আমার একটাই কর্তব্য: বাংলাদেশের নবীনদের এই আন্দোলনে শামিল থাকা। আমার আশা, গোটা উপমহাদেশ এবং সারা পৃথিবী বাংলাদেশের তরুণদের এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেবে।
সুত্র : প্রথম আলো
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
HTTP://WWW.KABIRSUMANONLINE.COM/HOME/CAT/AUDIOS/
সুরের জন্য
সুরের জন্য শহীদ
আলতাফ মাহমুদ,
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে রয়েছি বুঁদ।
মৃতদেহ কেউ পায়নি,
দাফনও তো করা যায়নি,
বাংলাদেশেরই মাটিতে কোথাও হয়েছে তোমার স্থান -
এ দেশের জল হাওয়ায় মিশেছে তোমার সুরের গান।
কারা মেরেছিল তাঁকে?
শাহবাগ মনে রাখে...
মনে রাখাটাই হয় ইতিহাস একুশে ফেব্রুয়ারি,
বাংলা গানের কসম বলছি আমিই কি ভুলতে পারি?
১৯/০২/২০১৩
তিন মিনিটের জন্য
তিন মিনিটের জন্য শাহবাগ হল দেশ,
তিন মিনিটের জন্য দেশটাই শাহবাগ
এ হলো নতুন যুগের জন্ম
আকাশে পূর্বরাগ।
তিন মিনিটের নীরবতা হলো
যুগের আঁতুড় ঘর
গণতন্ত্রের অভিষেক হবে
দুনিয়ায় এর পর।
শহীদ যোদ্ধা বীরাঙ্গনারা
ইতিহাস জুড়ে জাগে
যৌবন যায় ইতিহাস গড়ে
আজকের শাহবাগে।
দূর থেকে
তবুওআমি শামিল
শামিল অন্যরাও,
বুড়ো সুমনের একটাই কথা
আমায় সঙ্গে নাও।
১৩/০২/২০১৩
শহীদ রাজীব
[ নিহত ব্লগার রাজীব হায়দারকে নিয়ে ‘শহীদ রাজীব’ শিরোনামে গান প্রসঙ্গে সুমন তাঁর ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রুদের হাতে নিহত শহীদ রাজীব হায়দারকে নিয়ে এই গান। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে শহীদ হয়েছেন সাহসী এই ব্লগার। শাহবাগের গণ-আন্দোলনের একজন সাহসী যোদ্ধা তিনি। আমি তাঁর মৃত্যুর খবর শুনেছি, রাস্তায় পড়ে থাকা তাঁর রক্তাক্ত নিথর মরদেহের ছবি দেখেছি।’
সুমন আরও লিখেছেন, ‘এ গানের মধ্য দিয়ে আমার ভেতর জন্ম নেওয়া প্রচণ্ড দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে। আমি রাজীবের বাবার বয়সী। আমার সন্তানরা যে স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছে, সেই স্বপ্নের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ ও মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন চিরদিন বেঁচে থাক। আরও বেঁচে থাক সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তরুণ প্রজন্মের এ সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ ]
কী বলব আজ কাকে
কোন সান্ত্বনা দেব—
এত দূরে থাকি কী করে বলব
খুনির খবর নেব!
কী বলব বন্ধুদের
কিসের অভয় দেব
এত দূরে থাকি কী করে বলব
আমি প্রতিশোধ নেব\
তবুও আমার গানে
খুনির বিরুদ্ধতা
শহীদ রাজীব পেলেন
মুক্তিযোদ্ধার অমরতা\
শহীদ রাজীব হায়দার
আমার সালাম নাও
এই দুনিয়ায় শাহাদাত বৃথা
যায় না তো একটাও।
তোমার রক্তে রাঙা
বিপুল অঙ্গীকার
যোগ্য বিচার পাবে একদিন
খুনি আর রাজাকার...
শাহবাগে রাতভোর
শাহবাগে রাতভোর
স্মৃতিতে একাত্তর
নব ইতিহাসে সাক্ষী
রইল প্রজন্ম চত্বর।
শ্লোগানে শ্লোগানে কাঁপে
লাখো নবীনের বুক
ছেলে মেয়েদের মুখেই
আমার বাংলাদেশের মুখ।
হাত ধরে ছেলে মেয়ে
মুক্তির গান গেয়ে
জেগে আছি প্রহরীর মতো
আসল বিচার চেয়ে।
শহীদ জননী দেখেছেন
জাগরণ প্রস্তুতি
সুফিয়া কামাল কাছেই আছেন
বিদ্রোহী নাতিপুতি..."
১১/০২/২০১৩
গণদাবি
বিমানে উড়তে তিরিশ মিনিট
এতো কাছে তবু দূর
বিলকুল নেই পাসপোর্ট ভিসা
সীমানা চেনেনা সুর।
সীমানা চিনিনা আছি শাহবাগে
আমার গীটারও আছে,
বসন্ত আজ বন্ধুরা দেখো
গণদাবী হয়ে বাঁচে।
বাঁচো গণদাবী, বাঁচো গণদাবী
আসল বিচার চাই,
যার যা পাওনা তাকে সেটা দাও
গণদাবী একটাই।
০৯/০২/২০১৩